লকডাউন এর পর
After Lockdown:- চলুন একটু ঘুরে আসা যাক কিছুদিন পরের ভবিষ্যত্ থেকে, অর্থাৎ যেদিন খাতা কলম আর সরকারি মতে শেষ হতে চলেছে বন্দীদশা। কি হতে পারে আর কেমন হতে পারে লকডাউন এর পর আমাদের
পৃথিবী, আমাদের দেশ, সমাজ। তারই একটা কাল্পনিক
চিত্র আঁকা যাক। না না একটা নয় আসুন সবাই মিলে অনেক গুলো চিত্র দিয়ে একটা কোলাজ
তৈরি করা যাক।
পরিবেশ পর্যটকঃ- খবর তো অনেক দিন আগে থেকেই আসতে শুরু করেছে যে দূষণের
মাত্রা অনেক কমে গেছে আর ও যাবে। সত্যি সত্যি পরিবেশ যেন নিজেকে purify করে নিতে পেরেছে
অনেকখানি। দূষণের মাত্রা অনেকটাই কম। খোলা হাওয়ায় প্রান ভরে শ্বাস নেওয়া যেতে পারে কিন্তু এতদিন ধরে বয়ে নিয়ে আসা ভয় টা তো আর এমনি এমনি যাবে না।
এই ২১ দিন মানুষের চলাচল না থাকায় এখানে সেখানে
বেড়ে উঠেছে স্বাভাবিক উদ্ভিদ। মাঠে ঘাটে সবুজ মসৃণ ঘাস ও নাম না জানা বসন্তের বুন
ফুলের সমাহার। হয়তো কোথাও কোথাও প্রজাপতি দেখা যাবে। বাবারা তাদের আদুরে তোতলা
ছেলে কে ডেকে বলবে ‘বাবু দ্যাকো এটা একটা বতারপ্লাই’। বাবু বাঁদরের মত নেচে উঠবে
হাততালি দেবে। আর বাবারা? তারা ভাসবে স্মৃতিচারণায়, নস্টালজিয়ায়।
ক্রিটিক্স- কিন্তু এর আয়ু
বেশি দিন নয়। খুব বেশি ১৭-২০ দিন। তারপর মানুষ আবার গান্ডুগিরি আর গুন্ডাগিরি
করবে। আদাজল খেয়ে হাত-মুখ কুলকুচি করে নেমে পরবে পরিবেশ দূষণ করতে। ২১ দিন ধরে
ধ্যানমগ্ন গাড়ি আবার বের হবে রাস্তায়। আবার হর্ন, ট্রাফিক, ধোঁয়া, দূষণ। মানুষের
মধ্যে আবার জেগে উঠবে আদিমতা।
চায়ের দকানের কাকু;- আসতে
আসতে বেলা বাড়বে।চা,রুটি, পরটা, ঘুঘনির দোকানে ভীর জমাবে অতিপরিচিত সবজান্তা কাকু। বাড়ির healthy খাবার খেয়ে বিরক্ত হয়ে
যাওয়া কাকুরা কাঁকুরে মুড়ি, ভেজাল তেলে ভাজা পরটা, ব্যাসন আর জল দেওয়া ঘুঘনি অতি
আয়েশ করে খাবে যেন ২০ বছর আগে খাওয়া মায়ের হাতে পায়েস।
চা খেতে খাতে তারা share করবে ২১ দিনের বন্দীদশার অসাধারন, দুর্ধর্ষ, রোমাঞ্চকর,
গায়ে কাঁটা দেওয়া, রহস্যজনক ঘরকন্নার গল্প। একটু জোয়ান ছেলে হয়তো রাতে হাতে জুতো
হাতে করে চোরের মত কন্ডোম কিনতে যাওয়ার গল্প ও শোনাবে।
যান্ত্রিক(office) মানুষ;- বেলা বাড়বে
মানুষ ছুটবে স্টেশনে। আজ কত দিন পর ট্রেনের ধাক্কা খাবে। একদম ঠিক সময়ে হয়ত ট্রেন
আসবে। তবে বিশেষ ভিড় থাকবে বলে মনে হয় না। কারন তখন ও অনেক জন কোরেন্টাইন উৎসবে
মত্ত।
ট্রেনে উঠে কেমন বাঙালি
বাঙালি, আঁতেলমার্কা নস্টালজিয়ায় ভুগবে।জানলার ধারে বসে দেখবে আকাশ, সবুজ গাছের
পিছন দিকে ছুটে যাওয়া কি রোমান্টিক মনে হবে সেই ক্ষণ। স্টেশন গুলো পিছনে ফেলে
এগিয়ে যাওয়া।
অফিসে খোসগোপ্প;- অফিসে
পৌঁছে সবাই তখন এক একজন বিশেষজ্ঞ। যার বাড়ি শহরের যত কাছে, সে তত বড় বিশেষজ্ঞ। কে কবার পুলিশের তাড়া
খেয়েছে, কে কিভাবে পুলিশ কে বোকা বানিয়ে মদ এনেছে। যে যত দুঃসাহসিক গল্প বানাতে
পারবে সে সেই দিনের Super Hero।
কেউ কেউ কাজ করতে গিয়েই জানতে পারবে যে তার কাজ
টা আর নেই। এই একুশ দিন অফিস খোলা ছিল কিন্তু সে কাজে যেতে পারেনি তাই কাজ টা আর নেই।
সেই মাসের টাকাটা ও হয়তো সে পাবে না। ২১ দিন কাজ চলেছে তুমি আসতে পারনি তোমার
প্রবলেম। পিঠে ব্যাগ আর চোখে জল নিয়ে ইতি উতি হেঁটে বেড়াতে ও দেখা যাবে হয়তো
কাউকে।
কপোতকপোতী- স্কুল কলেজের
ছাত্র-প্রেমিকরা সব থেকে বেশি খুশি।বাড়িতে বসে বোর হওয়া আর বাবা মায়ের হরিনাম শুনতে
হচ্ছিল। বাবা মায়ের জন্য কথা ও বলতে পারেনি প্রানের মানুষের সাথে। আজ সব হবে। দেখা
হবে,কথা হবে, হাত ধরে ঘোরা হবে, চুমু হবে। আবার কারও কারও হয়তো ঘুমু ও হবে।২১
দিনের উপবাসী বলে কথা।
কত জমে থাকা রাগ অভিমান ভালবাসা দেখা যাবে
ঢাকুরিয়া lake এ, বিবিসি, সেন্ট্রাল পার্ক
এ। কেউ কেউ নিজে নিজেই আবিষ্কার করবে পাসের বাড়ির ছেলেটা তো মন্দ নয়। বা সামনের
বাড়ির বৌদিটা তো হেব্বি ডবকা।
সামাজিক দর্পণ(পত্রিকা)- প্রগতিশীল চিন্তা ভাবনা থমকে গিয়েছিল যে সমস্ত প্রতিভাধর কূলমারধন দের তাদের এবার
প্রজাপতি হওয়ার সময়। প্রকাশিত হবে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা। ‘কেমন কাটল করেন্টাইনের
দিনগুলি’,সমাজে অর্থনীতির তালমাটালের প্রভাব, চিনের বিরুদ্ধে কি ব্যাবস্থা নেবে রাষ্ট্রসংঘ?,
ইতালির প্রধান মন্ত্রীর এই সময়ে কি বক্তব্য?, নানান theory, তত্ত্ব, তথ্য,
দার্শনিকতায় ভরে উঠবে পত্র-পত্রিকা। কেউ বলবে এ এক বিপ্লব, প্রাকৃতিক বিপ্লব(revolution of nature)), কেউ বলবে প্রকৃতির প্রতিশোধ। কেউ কেউ তো রবীন্দ্রনাথের
দূরদর্শিতার কথা তুলে লিখে দেবে- ‘দাও ফিরে সে অরন্য, লও এ নগর’ কবিতাটি।
সামাজিক জীব- এসবের মধ্যে
যেটা এতটুকু পরিবর্তন হবে না তা হল মানুষের মনুসত্ত্ব, মানবিকতা, বিবেকবোধ। যেমন
ক্রুর আর হিংস্র ছিল তেমনই থাকবে। বারুইপুরে চার নম্বর প্লাটফর্মে বসে থাকা ভিখারি
কে দেখে হয়তো কেউ বলবে- ‘আরে এ মালটা এখন ও বেঁচে আছে আমি ভাবলাম না খেতে পেয়ে
মরবে’।
১।। তখন ও হয়তো কোন শ্বাশুরি হাতে কেরসিন নিয়ে বসে আছে
তার হবু বউমার জন্য।
২।। তখন ও কি কোন মেয়ে রাতে ফাঁকা রাস্তায় আসার ভয়
থেকে মুক্তি পাবে?
৩।। ৩খন ও চলবে পুরদমে চলবে লক ঠকানোর উৎসব।
৪।। তখন ও লোক মেশাতে থাকবে শিশু খাদ্যে ভেজাল।
৫।। তখন
ও মানুষ উঠে পরে লাগবে কন্যাভ্রুন হত্যা করার জন্য।
৬।। সুযোগ বুঝে প্রেমিকার intimate মুহূর্তের ছবি social media upload চলবে।
হয়ত ভরা ট্রেনে কারও কাশির শব্দে হাত চলে যাবে
পকেটে আর মাস্ক উঠে আসবে নাকে। সূর্যাস্ত – সূর্যদোয় দেখার দিন যে শেষ হয়ে গেছে।
(ভালো লাগলে ও ভালো না লাগলে Comment করে জানাতে পারেন।
আদেশ, উপদেশ, অনুরোধ থাকলে তাও জানাতে পারেন।)
- কাশীরাম দাস কি মহাভারতের হুবহু অনুবাদ করেছেন?
- বর্তমান দিনে শিশুশ্রম ও সভ্য সমাজ
- শ্রীকান্ত জিচকর' ভারতবর্ষের সর্ব্বোচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি
- কবি হওয়ার সহজ উপায় / How To Become A Poet eas
- লকডাউন,ভগবান ও যাদবপুর ঝিলপাড় / Lockdown,God and J.U
- হীরক রাজার দেশে লকডাউন
- প্ল্যানচেটে উত্তমকুমার কে ডাকলাম
- আমরা পুরুষ!! আমরা বর্বর!! / We Are Men !! We Are Barbarians !!
- বাংলা(সাধু) ভাষা প্রসঙ্গে / About Bengali Language
- Sad Reality Of Boys / আজকের সমাজে ছেলেদের গল্প
- A Day (Story) to Before Die / মৃত্যুর আগের একটি (গল্প) দিন।
- বেকারছেলে ও বিকালের মেয়েরা / Unemployed Boys And Girls In Evening
- সোশ্যাল মিডিয়ার E- ভাষা / E- Language Of Social Media
- আমরা বাঙালী, "যতক্ষন শ্বাস, ততক্ষণ গ্রাস"/ Bengali New Year 1st Day for Us
- We Can Do Anything(Deram vs Reality)/ আমরা সব করতে পারি(স্বপ্ন বনাম বাস্তব)
- Corona And Stupid People / করোনা আর বোকা** লোক
After Lockdown,after lockdown period india,after lockdown trains will start,after lockdown what,after lockdown period,after lockdown colleges will open,after lockdown what will happen,after lockdown school will reopen,after lockdown rules,love after lockdown ,history after lockdown,youth after lockdown,economy after lockdown,socity after lockdown,human after lockdown,লকডাউনের পর কি হবে,লকডাউনের পর আমরা,লকডাউনের পর সমাজ,লকডাউনের পর চায়ের দোকান,লকডাউনের পর ক্রিটিক্স,লকডাউনের পর সামাজিক জীব,লকডাউনের পর অফিস,lokdown er ki hobe,ki hobe lockdown er po,kemon hobe lockdown er por,after lockdown 1st day
ConversionConversion EmoticonEmoticon