‘ভারত - চীন সংঘর্ষ’’ —কেনো?
চীন হঠাৎ ভারতের বিরুদ্ধে কেন সীমান্ত ইস্যু নিয়ে
মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো?’’ বিশেষ করে যখন সারা পৃথিবী
LockDown আর
Corana নিয়ে ব্যস্ত।
প্রায় ১৮৫টি দেশ নিজের গড়িয়ে পড়া অর্থনীতি চাঙ্গা করতে ব্যস্ত। রাশিয়া, ইতালি,
আমেরিকার মত দেশ যেখানে আন্তর্জাতিক সমস্ত ক্রিয়াকলাপ বন্ধ করে শুধু মাত্র দেশের
অর্থনীতি নিয়ে ব্যস্ত সেখানে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল দেশ সীমান্ত সংঘর্ষ নিয়ে
কিভাবে মাথা ঘামাতে পারে?
* চীন এই মহামারীকালীন সময়ে
এমনিতেই বর্হিবিশ্বে চাপে রয়েছে। ট্রাম্প ও কিমজন প্রায় যুদ্ধ করতে প্রস্তুত(আন্তর্জাতিক চাল)। ভারত এই সময় আমেরিকা নেতৃত্বাধীন
চীনাবিরোধী জোটের সাথে যোগ দেয়। চীন সুযোগ
সুযোগ পেয়ে গেল প্রতবেশি ভারতকে চাপে রাখার। আর সেই সুযোগটি অবশ্য ভারতই
করে দিলো!
ভারত
সম্প্রতি (৮ মে, ২০২০) লাদাখের চীনা সীমান্তের নিকটে ৮০ কি.মি. দীর্ঘ একটি নতুন রাস্তা
উদ্ভোধন করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এর মাধ্যমে ভারত এই রাস্তা দিয়ে খুব সহজেই
সৈন্য এবং মালামাল পাঠাতে পারবে চীনের সাথে কোনো সংঘর্ষে জড়ালে।আপদকালীন সময়ে এই রাস্তা
ভীষণ উপযোগী ভারতের জন্য।
চীন বিষয়টি সহজভাবে দেখেনি। সুতরাং ২০২০ সালে মহামারীর এই সময়ে এইভাবেই
শুরু হয়ে গেলো দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার নতুন মাত্রা !
বর্তমানে
ভারত সরকার চীনের উপদ্রব কমানোর জন্য চীন বর্ডারে দ্রুত পাকা রাস্তা, ব্রীজ নির্মাণ
করতে থাকে, এবং চীনকে মোকাবিলা করতে অস্ত্র ও যুদ্ধবিমান কিনতে থাকে, ভারতের মত শত্রুদেশের
এভাবে শক্তি বাড়ানো চীনের পছন্দ হয় নি।
#চীন মূলত যে ইস্যুগুলোতে ভারতের উপর চটা!
জোট
থেকে দূরে রাখতে:
আমেরিকা সহ অন্যান্য দেশ করোনা
ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল ও বর্হিবিশ্বে প্রাদুর্ভাব ছড়ানোর জন্য চীনকে দায়ী করছে। আমেরিকা বর্হিবিশ্বে
চীনা বিরোধী কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। চীন ভারতকে চাপে রেখে এই কমিশন থেকে দূরে
রাখতে চেষ্টা করছে।
চীনের
অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে ইন্ধন:
হংকং ও তাইওয়ান ইস্যুতে ভারত যেনো আমেরিকাকে
সমর্থন না দেয়। চীনের অভ্যন্তরীণ অর্থাৎ হংকংয়ের
গণতন্ত্রকামীদের ভারতের সমর্থন করা বিষয়টি চীন ভালভাবে নেয় নি!
ভারতমুখী
বিনিয়োগ:
সম্প্রতি করোনার ভাইরাস
প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বের বৃহত্তর তথ্য-প্রযুক্তি ও মোটর কোম্পানিগুলো চীন থেকে
বিনিয়োগ ফিরিয়ে ভারতমুখী হচ্ছে এবং ইতিমধ্যে টয়োটা, স্যামসাং এর মতো কোম্পানিগুলো চীন
থেকে কারখানা সরানোর ঘোষণা দেয়। এক্ষেত্রে আমেরিকা ভারতকে সহায়তা করছে ইন্টারনালি!!
যেটা চীন ভালভাবে নেয় নি।
চীন যেভাবে ভারতকে চাপে রাখছে:
নেপালকে দিয়ে ঘায়েল করা:
ভারতকে
প্রচন্ড মানসিকভাবে চাপে রাখার জন্যে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে নেপালকে। চীনের সমর্থনেই
নেপাল সম্প্রতি ৩টি অঞ্চল (কালাপানি, লিপুলেখ ও লিমপিয়াধুরা) নিজেদের মানচিত্রে যুক্ত
করে পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে। এই ৩টি অঞ্চল নিয়ে নেপাল-ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের
বিরোধ রয়েছে। নেপাল ভারতকে তোয়াক্কা না করে চীনের ইন্টারনালি সমর্থনেই এ কাজটি করেছে।
নেপাল কেন হঠাৎ ভারত বিদ্বেষী হলো?
নেপাল
২০১৫ সালের পূর্বে ভারতকে প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন করতো! এমনকি নেপালের পররাষ্ট্রনীতিও
দেখভাল করতো ভারত! কিন্তু ভারত নেপালকে ২০১৫ সালে অর্থনৈতিক অবরোধ, তেল অবরোধসহ সীমান্ত
বন্ধ করে দেয় এছাড়া নেপালে ২০১৫ সালে বিশাল ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই আপদাকলীন সময়েও
ভারত হতে নেপালের পর্যাপ্ত সাহায্য পায়নি । এমতাবস্থায় নেপালের আশীর্বাদ হিসেবে সামনে
আসে চীন। সেই সময়টাতে চীন নেপালকে অর্থ, তেল, খাদ্য, ঔষধ ইত্যাদি দিয়ে নেপালকে সাহায্য
করে, যার ফলে নেপাল চীন ঘেঁষা হয়ে যায়! এছাড়া নেপালের বর্তমানে কমিউনিস্ট সরকার যারা
রাজনৈতিকভাবে চীনা ঘেঁষা। সবমিলিয়ে ভারতের কিছু কৌশল গত ব্যর্থতার কারনেই নেপালের সাথে
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটা নষ্ট করে ফেলে ভারত!!
দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে চীনের প্রভাব কেমন?
বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের মধ্যেই পাকিস্তান,
নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা অর্থাৎ ৪টি দেশের সাথে চীনের সক্ষতা অত্যাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে।
যেমন:
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে চীনের অর্থায়নে আরব সাগরে গোয়াদার সমুদ্রবন্দর এবং
শ্রীলঙ্কায় ভারত মহাসাগরে হাম্বানটোটা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করছে চীন।
ভোকলাম
ত্রিমুখী সীমানা নিয়ে ২০১৭ সালে ভুটান ও ভারতের মধ্যে দ্বন্ধ দেখা হয় এবং এর প্রেক্ষাপটে
ভুটান ও চীনামুখী হয়। অবশ্য ২০১৮ সালে মালদ্বীপের সাধারণ নির্বাচনে ইব্রাহিম মোহাম্মদ
সলিহ ক্ষমতায় আসলে তিনি ভারতমুখী হয় এবং এতে চীনা প্রভাব হ্রাস পায় যদিও মালদ্বীপে
চীনা প্রচুর অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে
আফগানিস্তানে চীনা বলয় নেই কারণ আফগানিস্তানে পররাষ্ট্রনীতি
ঢেলে সাজিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের সাথে সক্ষতার কারণে ও যুক্তরাষ্ট্রের
এশিয়া নীতির আলোকে তৎকালীন ওবামা প্রশাসনের সহায়তায় ভারত আফগানিস্তানে বিশাল বিনিয়োগ
করে।
মজার বিষয় লক্ষ্য করুন, আফগানিস্তান যেহেতু স্থলবেষ্টিত
রাষ্ট্র তাই ভারতকে পণ্য রপ্তানি করতে হবে স্থলপথে অর্থাৎ পাকিস্তানের উপর দিয়ে। কিন্তু
স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তান তাতে সম্মতি দিবে না এটাই স্বাভাবিক! তাই ভারত নিজস্ব অর্থায়নে
আরব সাগরের তীরে দক্ষিণ ইরানে ‘চাবাহার বন্দর’ নির্মাণ করে এবং সে পথে ইরানকে ট্রানজিট
হিসেবে ব্যবহার করে আফগানিস্তানে বাণিজ্য শুরু করে ভারত।
বাংলাদেশ ভারতমুখী না চীনমুখী!:
- দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে ভাল সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশের সাথে। এক কথায় বলা যায় খুব বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, স্বাধীনতার পর।
- তবে লক্ষ্যণীয় যে, বাংলাদেশের অধিকাংশ মেগা প্রজেক্টে চীনা অর্থায়ন ও অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে (যেমন: পদ্মা সেতু নির্মাণ, কর্ণফুলী টানেল, বিভিন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্প ইত্যাদি)।
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ২৫% শেয়ার চীনের দখলে।
- বাংলাদেশের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কথা ছিলো এবং এতে চীন অর্থায়নে আগ্রহী ছিলো কিন্তু ভারত এতে হস্তক্ষেপ করে অর্থাৎ ভারত ও এখানে অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে! যার কারণে বাংলাদেশ এ প্রজেক্ট থেকে সরে আসে ব্যালেন্স করতে গিয়ে।
- ২০১৭ সালে বাংলাদেশ চীন থেকে নবযাত্রা ও জয়যাত্রা নামে ২টি সাবমেরিন ক্রয় করে, ভারত এতে চরম অসন্তুষ্ট প্রকাশ করে তবে এটা বাংলাদেশ অত্যন্ত সুন্দর ও নিপুণভাবে তা ব্যালেন্সিং করে। সুতরাং বাংলাদেশ ২ দেশের সাথেই সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে!
#চীনের মূল উদ্দেশ্য যেটা!
- চীন বর্তমানে বিশ্বে ২য় বৃহত্তম অর্থনৈতিক রাষ্ট্র এবং PPP এর দিক থেকে একক বৃহত্তম অর্থনৈতিক রাষ্ট্র এবং করোনা পরবর্তী বিশ্ব রাজনীতিতে চীন যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিজেদের একক বৃহত্তর পরাশক্তি দেশ হিসেবে জানান দিতে চায়।
- চীন সর্বদাই দাবী করে আসছে যে ভারতের অন্তর্ভুক্ত লাদাখ ও অরুণাচল প্রদেশ চীনের অংশ।
- চীন ও ভারতের মধ্যে কোনো সীমানা থাকার কথা নয়, কারণ উভয় দেশের মধ্যে তিব্বত পরে। কিন্তু চীন গায়ের জোরে তিব্বত দখল করে নিলে চীন ভারতের প্রতিবেশী দেশে পরিণত হয়। তাদের সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টি এখন ভারতের দিকে পরেছে।
- কয়েকমাস আগে জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা ভেঙে দিয়ে সরকার Union Territory বলে ঘোষণা করে, এবং চীন ও পাকিস্তান কতৃক দখলকৃত অঞ্চলকে ভারতভুক্তির অঙ্গীকার করে। এতে চীনের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়, কারণ ফ্রিতে দখল করা জমি কেউই ছাড়তে চায় না, তার উপর আকসাই চীন ও POK তে চীন OBOR project এর মাধ্যমে বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করেছে।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------
IF Any One Like Our Work,Our Blog Then Support Us On Google Pay - Our Google Pay UPI ID- roysuvajit057@oksbi
follow me :- https://bekarchele7.blogspot.com/
Read More:-
- বর্তমানে চীন ও ভারতের সীমান্ত সমস্যা
- কাশীরাম দাস কি মহাভারতের হুবহু অনুবাদ করেছেন?
- বর্তমান দিনে শিশুশ্রম ও সভ্য সমাজ
- শ্রীকান্ত জিচকর' ভারতবর্ষের সর্ব্বোচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি
- কবি হওয়ার সহজ উপায় / How To Become A Poet eas
- লকডাউন,ভগবান ও যাদবপুর ঝিলপাড় / Lockdown,God and J.U
- হীরক রাজার দেশে লকডাউন
- প্ল্যানচেটে উত্তমকুমার কে ডাকলাম
- আমরা পুরুষ!! আমরা বর্বর!! / We Are Men !! We Are Barbarians !!
- বাংলা(সাধু) ভাষা প্রসঙ্গে / About Bengali Language
- Sad Reality Of Boys / আজকের সমাজে ছেলেদের গল্প
- A Day (Story) to Before Die / মৃত্যুর আগের একটি (গল্প) দিন।
- বেকারছেলে ও বিকালের মেয়েরা / Unemployed Boys And Girls In Evening
- সোশ্যাল মিডিয়ার E- ভাষা / E- Language Of Social Media
- আমরা বাঙালী, "যতক্ষন শ্বাস, ততক্ষণ গ্রাস"/ Bengali New Year 1st Day for Us
- We Can Do Anything(Deram vs Reality)/ আমরা সব করতে পারি(স্বপ্ন বনাম বাস্তব)
- Corona And Stupid People / করোনা আর বোকা** লোক
ConversionConversion EmoticonEmoticon